সরকার ১০টি মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ‘সচেষ্ট’। ওই ১০ মেগাপ্রকল্প নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। মেগাপ্রকল্পের শীর্ষে আছে যথারীতি পদ্মা সেতু। আছে বাগেরহাটের রামপালের কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রও।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেট বক্তৃতায় ওই ১০টি মেগাপ্রকল্পের কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করেন তিনি। একই সঙ্গে এসব প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতার সঙ্গে এ বিষয়ে ‘কাঠামো রূপান্তরে বৃহৎ প্রকল্প : প্রবৃদ্ধি সঞ্চারে নতুন মাত্রা’ নামে পুস্তিকা উপস্থাপনের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘যাতে প্রকল্পগুলোর সামাজিক ও অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে এদের প্রভাব বর্ণনা করা হয়েছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজের সিংহভাগ এবং এর মূল সেতু ও নদীশাসন কাজের এক-পঞ্চমাংশ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য আইন প্রণয়নসহ এর পরিচালনার জন্য একটি কোম্পানি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পাদিত চারটি চুক্তির মধ্যে দুটির শতভাগ এবং অপর একটির ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। মেট্রোরেল স্থাপনের জন্য রাজউক হতে প্রাপ্ত জমি রেজিস্ট্রেশনসহ জিওটেকনিক্যাল ও রাইট অব ওয়ে সার্ভের কাজ সম্পন্ন করেছি। আশা করছি, এর ডিটেইল ডিজাইনের কাজ আগামী আগস্টে সমাপ্ত হবে।’
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনে জি টু জি ভিত্তিতে উন্নয়ন সহযোগী দেশ বা সংস্থা অনুসন্ধানের কাজ চলছে। পায়রা বন্দরের জন্য জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ এবং মূল বন্দর নির্মাণের জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজ চলছে। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ভূমি উন্নয়ন, সীমানা প্রাচীর ও ঢাল সুরক্ষা নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে এবং এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের কাজও এগিয়ে চলেছে।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে পদ্মা রেল সেতু সংযোগ এবং কক্সবাজার-দোহাজারি-রামু-গুনদুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প।’ এ ছাড়া মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ছয় হাজার ২৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকারের কাঠামো রূপান্তরে বৃহৎ প্রকল্পের আওতায় এ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে মোট প্রাক্কলিত ব্যয় হচ্ছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতি শতকরা ৩২ ভাগ। এ পর্যন্ত এ প্রকল্পে চলতি বছরে এপ্রিল মাস পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু যানবাহন পারাপারে জন্য খুলে দেওয়া হবে আশা করা যাচ্ছে।
এদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মেট্রোরেল প্রকল্পে দুই হাজার ২২৭ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। মেট্রোরেল প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.